গোপালগঞ্জে ধানে প্রণোদনা পেয়েছে ৪৭ হাজার ৪০০ কৃষক , গোপালগঞ্জে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ৪৭ হাজার ৪০০ কৃষককে প্রণোদনা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরমধ্যে ২৭ হাজার কৃষককে হাইব্রিড ও ২০ হাজার ৪০০ কৃষককে উফশী জাতের ধানবীজ প্রদান করা হয়েছে। উফশী জাতের ধানবীজের সাথে বিনামূল্যে ২০৪ টন ডিএপি ও ২০৪ টন এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জে ধানে প্রণোদনা পেয়েছে ৪৭ হাজার ৪০০ কৃষক
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাই আমরা জেলায় ৮০ হাজার ৫৪৬ হেক্টরে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এরমধ্যে ৫৮ হাজার ৩৪০ হেক্টরে আমরা হাইব্রিড ধানের আবাদ করব। এতে ফসলের উৎপাদন হেক্টরে ১ টন বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় গোপালগঞ্জে ৪৭ হাজার ৪০০ কৃষককে ধানে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ইতিমধ্যে আমরা প্রণোদনার ধানবীজ ও সার বিতরণ সম্পন্ন করেছি। কৃষক এখন এ ধান দিয়ে বীজতলা তৈরি করছেন।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, আমরা ৫ উপজেলার ২৭ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড ধানবীজ এসএল-৮এইচ ও ব্রি হাইব্রড ধান-৫ বিতরণ করেছি। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদরে ৫ হাজার, মুকসুদপুরে ৪ হাজার, কাশিয়ানীতে ৩ হাজার ৭৫০, কোটালীপাড়ায় ৭ হাজার ৯৫০ ও টুঙ্গিপাড়ায় ৬ হাজার ৩০০ জন কৃষক এ সহায়তা পেয়েছেন। এ ধান দিয়ে কৃষক ২৭ হাজার বিঘা জমিতে হাইব্রিড ধানের চাষাবাদ করতে পারবেন।
উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় আরো বলেন, ৫ উপজেলার ২০ হাজার ৪০০ কৃষককে ৫ কেজি করে উফশী জাতের ধানবীজ প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১০ কেজি করে ডিএপি সার ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দিয়েছি।
ওই কর্মকর্তা জানান, গোপালগঞ্জ সদরে ৫ হাজার, মুকসুদপুরে ৩ হাজার ২০০,কাশিয়ানীতে ৩ হাজার, কোটালীপাড়ায় ৬ হাজার ২০০ ও টুঙ্গিপাড়ায় ৩ হাজার কৃষক এ প্রণোদনার বীজ সার পেয়েছেন। এ বীজ সার দিয়ে ২০ হাজার ৪০০ বিঘা জমিতে কৃষক উফশী জাতের ধানের আবাদ করবেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, কৃষকরা ধানে রেকর্ড পরিমান প্রণোদনা পেয়েছেন। আমরা অধিক ধান উৎপাদনের জন্য তাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ দিয়েছি। সেই ভাবেই তারা আদর্শ বীজতলা তৈরি করছেন। এরপর তারা বীজতলা থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করে মাঠে বোরো আবাদ করবেন। আশার করি কৃষক হাইব্রিড ধানের আবাদ বৃদ্ধি করে এ বছর সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন করবেন।

কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন (৫৫) বলেন, ইাইব্রিড ধানে প্রণোদনা পেয়েছি। সেই সাথে এ ধান চাষাবাদে পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এখন তাদের পরামর্শে বীজতলা তৈরি করেছি। আবহাওয়া ধান চাষের অনুকূলে ও আল্লাহ সহায় থাকলে আশা করছি এ বছর ধানের বাম্পার ফলন পাব।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি গ্রামের কৃষক সাজেদুর রহমান মুন্সি (৪৫) বলেন, আমি প্রণোদনার উফশী ধানবীজ ও সার পেয়েছি। এগুলো দিয়ে ইতিমধ্যেই চাষাবাদ শুরু করেছি। গত বছরও কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ধানের ভালো ফলন পেয়েছিলাম। এবছরও ধানের আশানুরূপ ফলন পাব। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এইচএম খায়রুল বাসার বলেন, আমাদের চাষাবাদের জমি বাড়ছে না। তাই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে অল্প জমিতে অধিক ফসল ফলাতে হবে। এ জন্য হাইব্রিড ধানের আবাদ সম্প্রসারণ করতে হবে। গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সেই কাজটিই করছে। হাইব্রিড ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেলে গোপালগঞ্জে ধানের উৎপাদন প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়বে।
আরও দেখুন:
2 thoughts on “গোপালগঞ্জে ধানে প্রণোদনা পেয়েছে ৪৭ হাজার ৪০০ কৃষক”