গোপালগঞ্জে ৩ টাকায় মিলছে ২০০ মিলি সুপেয় পানি

২০০ মিলি সুপেয় পানি – পথে প্রান্তরে নিরাপদ পানির উৎস দিন দিন কমছে। চলার পথে বোতলজাত পানি কিনে পান করার সামর্থ্য দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের নেই। বিপুলসংখ্যক এসব মানুষের কথা চিন্তা করে দেশে প্রথমবারের মতো পলিব্যাগে পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

গোপালগঞ্জে ৩ টাকায় মিলছে ২০০ মিলি সুপেয় পানি

 

জে কে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। এই পানি বিক্রি করে আয় করা টাকা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মানুষের সেবায় ব্যয় করা হবে বলে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

 

জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তারগ্রামে তিন বছর আগে জে কে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ একটি পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করে। ওই প্ল্যান্ট থেকে তারা সব আকারের বোতলজাত পানি উৎপাদন করে। পরে তারা পলিব্যাগে পানি উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নেয়। চলতি বছরের নভেম্বর থেকে ২০০ ও ৫০০ মিলিলিটারের পলিব্যাগে তারা পানি সরবরাহ শুরু করে। খুচরা পর্যায়ে ২০০ ও ৫০০ মিলির পলির দাম নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে তিন ও পাঁচ টাকা। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বল্প খরচে পানি কিনে পান করতে পারছেন।

ফ্যাক্টরি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আগে চলার পথে মানুষ পুকুর, নদী, টিউবওয়েল, ট্যাপ থেকে পানি পান করতেন। পানিতে বিভিন্ন কারণে এখন দূষণের মাত্রা বেড়েছে। এতে ওই সব উৎসের পানি অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। আবার প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের পক্ষে বোতলজাত পানি কিনে পান করাও সম্ভব হয় না। তাদের কথা চিন্তা করে আমরা সাশ্রয়ী মূলে বাজারে পানি সরবরাহ করছি। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এখন আমরা এই উদ্যোগকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া চেষ্টা করছি।’

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

পলিব্যাগের পানির ভোক্তা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘স্বল্পমূল্যে পলিব্যাগের নিরাপদ পানি পান করে আমরা পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারছি। এত কম দামে পানি পাওয়া যাবে তা কখনো কল্পনাও করিনি। এমন উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।’

সেলিম শেখ নামে আরেকজন বলেন, ‘আমি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মালপত্র বিক্রি করি। বিভিন্ন সময় পানির পিপাসা পেলেও দাম বেশি হওয়ায় বোতলজাত পানি কিনে পান করতে পারতাম না। মানুষের বাড়ির টিউবওয়েল বা দোকানোর খোলা পানির ওপর নির্ভর করতে হতো। এতে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই। পরে জানতে পারি পলিব্যাগের পানি কম দামে পাওয়া যায়। এখন আর বাইরের খোলা পানি খাই না। তিন টাকা দিয়ে পলিব্যাগের পানি পান করি। এতে পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি।’

জে কে পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান সিকদার বলেন, ‘বেঁচে থাকতে হলে পানির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের বোতলজাত সুপেয় পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাদের কথা চিন্তা করে পলিব্যাগের মাধ্যমে পানি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। এই পানি বিক্রি করে আয় হওয়া অর্থ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, এতিম, দুস্থ ও অসহায়দের কল্যাণে ব্যয় করছি।’

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী রতন কুমার সাহা বলেন, ‘জে কে পলিমারের এ উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ স্বল্পমূল্যে সুপেয় পানি পানের সুযোগ পাবেন। আমি আশা করছি, এ পানি পান করলে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা কমবে।’

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment